জামালপুর প্রতিনিধি// সাংবাদিক গোলাম রব্বানি নাদিম হত্যা মামলায় ৯ আসামিকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। শনিবার সন্ধ্যায় জেলা জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর আহমেদ আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পুলিশ তাদের রিমান্ডে চাইলে সেই পরিপ্রেক্ষিতে আদালত রবিবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন।
এর আগে, নাদিমকে হত্যায় অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যানকে প্রধান আসমি করে ২২ জনের বিরুদ্ধে শনিবার দুপুরে মামলা করেন নিহতের স্ত্রী মনিরা বেগম। মামলায় দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে রিফাতকে। এ ছাড়া এ মামলায় অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আটক ৯ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে বিচারক আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে রবিবার (১৮ জুন) রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত।
কারাগারে পাঠানো আসামিরা হলেন—বকশীগঞ্জ উত্তর বাজার এলাকার গোলাম কিবরিয়া সুমন (৪৩), মালিরচর নয়াপাড়ার মিলন (২৫), নামাপাড়ার তোফাজ্জল (৪০), আইনাল হক (৫৫), কফিল উদ্দিন (৫৫), দক্ষিণ কুতুবেরচর এলাকার ফজলু মিয়া (৩৫) ও তার ভাই শহিদ (৪০), মোল্লাপাড়া এলাকার মকবুল (৩৫) এবং সর্দারপাড়া মেরুরচরের ওহিদুজ্জামান (৩০)।
বিষয়টি নিয়ে বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহেল রানা বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতদের রিমান্ড আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত রবিবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেছেন। মামলার বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’
গত বুধবার রাতে বকশীগঞ্জে বাসায় ফেরার পথে উপজেলার পাটহাটি এলাকায় উপজেলার সাধারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর নির্দেশে দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত হন সাংবাদিক নাদিম। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টার দিকে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু নেতৃত্ব দেন বলে জানিয়েছে র্যাব। সংস্থাটি জানায়, বাবুর নির্দেশনায় রাব্বানিকে হত্যা করে তার সন্ত্রাসী বাহিনী।
সাংবাদিক নাদিম হত্যার ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘রাত আনুমানিক ১০টার দিকে নাদিম বাড়ি ফিরছিলেন। পথে বকশীগঞ্জ বাজারের পাটহাটি এলাকায় বাবু তার সন্ত্রাসীদের নিয়ে নির্জন স্থানে ওত পেতে থাকে। নাদিম তার এক সহকর্মীসহ মোটরসাইকেলযোগে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে বাবুর সন্ত্রাসীরা তাকে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।’
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘পরবর্তীতে পেছন থেকে দৌঁড় দিয়ে বাবুর আরও কয়েকজন লোক গিয়ে গোলাম রব্বানি নাদিমকে মারতে মারতে পাশের একটি অন্ধকার গলিতে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যায় এবং এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে। ওই সময় প্রধান অভিযুক্ত বাবু ঘটনাস্থলের নিকটে থেকে পুরো ঘটনার নেতৃত্ব দেন। নাদিমের সহকর্মী তাকে বাঁচাতে গেলে বাবুর সন্ত্রাসীরা তাকেও মারধর করে। একপর্যায়ে নাদিমের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে গেলে বাবু ও তার সন্ত্রাসী গ্রুপ ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তী দিন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাংবাদিক নাদিম মারা যান।’
খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর পরিকল্পনাতেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।