এস.এম.রিয়াদুল ইসলাম, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি।
সরকারি প্রণোদনার আওতায় কুষ্টিয়ার ছয়টি উপজেলায় প্রায় চার হাজার কৃষকের মধ্যে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বীজ বিতরণ করা হয়েছে। তবে এই বিতরণ কার্যক্রমে গুরুতর অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কৃষকদের দাবি, তাদের নিম্নমানের বীজ দেওয়া হয়েছে, যার ফলে তারা চরম ক্ষতির শিকার হয়েছেন।
কৃষকরা অভিযোগ করেছেন, যে বীজগুলো তাদের দেওয়া হয়েছে, তার প্যাকেটে কোনো মূল্য, উৎপাদন বা মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ উল্লেখ নেই। এমনকি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের নাম থাকলেও নেই কোনো নির্দিষ্ট ঠিকানা। এই নিম্নমানের বীজ বপন করে অনেক কৃষকই হতাশ হয়েছেন। তাদের অভিযোগ, সরকারি বরাদ্দের মোটা অঙ্কের অর্থ এই নিম্নমানের বীজ বিতরণের মাধ্যমে লোপাট করা হয়েছে।
এক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক জানান, “অফিস থেকে যে বীজ দিছিল, তা লাগানোর পরে চারা বের হইছিল ঠিকই, কিন্তু পরে সব মইরা গেছে।” আরেকজন কৃষক বলেন, “দানা বের হইছে, কিন্তু পরে আর বাড়েনি।
বীজ ব্যবসায়ীরা বলছেন, বীজ আইনের বিধান অনুযায়ী প্রতিটি প্যাকেটে উৎপাদন ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ, মূল্য এবং বিস্তারিত তথ্য থাকা বাধ্যতামূলক। অন্যদিকে, বীজ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, তারা কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ীই বীজ সরবরাহ করেছে।
তবে, কুষ্টিয়ার বিভিন্ন উপজেলার কৃষি কর্মকর্তারা এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাদের দাবি, তারা সব নিয়ম মেনেই কাজ করেছেন এবং বীজের গুণগত মান পরীক্ষা করেই তা কৃষকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক,আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরিফিন বলেন, “এই অনিয়ম সম্পর্কে আমার জানা ছিল না। যদি কোনো অভিযোগ আসে, তাহলে অবশ্যই তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা এই অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর তদন্ত এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। তারা মনে করেন, দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর ঘটবে না।