এস.এম.রিয়াদুল ইসলাম,কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তের অরক্ষিত পথ ও পদ্মা নদীর জলসীমা দিয়ে মাদকের পাশাপাশি অস্ত্রের প্রবাহ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের মতে, গত এক বছরে এই সীমান্তের মাধ্যমে অস্ত্রের বড় বড় চালান দেশে প্রবেশ করেছে।
তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মতে, যদিও অস্ত্র এসেছে, কিন্তু বড় চালান সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য নেই। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং পুলিশের অভিযানে এখন পর্যন্ত ৩৩টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ ৩২৮টি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। ৩০টি মামলায় ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিজিবির তথ্য অনুসারে, দৌলতপুর সীমান্তের ৮১.৫ কিলোমিটার এলাকা ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গী ও করিমপুর থানার বিপরীতে অবস্থিত। স্থানীয় সূত্র জানাচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তের অরক্ষিত পথ দিয়ে মাদক, স্বর্ণ এবং আগ্নেয়াস্ত্র পাচারের ঘটনা ঘটছে। আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের পশ্চিম ধর্মদহ সীমান্ত, প্রাগপুর ইউনিয়নের মহিষকুন্ডি–জামালপুর এলাকা, রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চল্লিশপাড়া ও পদ্মা নদী ব্যবহার করে পাচারচক্র নির্বিঘ্নে চোরাচালান করে চলেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তির অভিযোগ, চলতি বছরের ১৩ মার্চ আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের পশ্চিম ধর্মদহ সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার ফাঁকা দিয়ে আটজন একটি ব্যাগ নিয়ে দেশে প্রবেশ করেছে এবং সেগুলোর মধ্যে অস্ত্র ছিল বলে ধারণা করছেন।
এদিকে বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ওই চালানটি অস্ত্রের ছিল কিনা তা নিশ্চিত নয়। সীমান্তবর্তী অভিযানে ১৭টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে, এর মধ্যে বিদেশি পিস্তল ৯টি, দেশী ওয়ান শুটার গান ৮টি ও ৩৬টি গুলি রয়েছে। এ ঘটনায় বিজিবি ১৭টি মামলা দায়ের করেছে ও ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশের মতে, তারা বিভিন্ন অভিযানে সীমান্ত এলাকা থেকে ১৬টি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করেছে, যার মধ্যে বিদেশি পিস্তল ৫টি, দেশীয় ওয়ান শুটার গান ১১টি ও ২৯২টি গুলি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এসব ঘটনায় ১৩টি মামলা হয়েছে এবং ১৫ জন গ্রেপ্তার হয়েছে।
কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহাবুব মুর্শেদ রহমান বলেছেন, ‘আমার বদলি হয়েছে। তবে দৌলতপুর সীমান্তের মাধ্যমে বড় ধরনের অস্ত্রের চালান প্রবেশ করা প্রায় অসম্ভব।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিজিবি নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যথেষ্ট অস্ত্র উদ্ধার করেছে। বর্তমানে সীমান্তে তীব্র নজরদারি করা হচ্ছে।
বিজিবির ৪৭ ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক জাকিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘১৩ মার্চের ঘটনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে, ওই পোটলাগুলোতে ফেনসিডিল ছিল, তবে তাদের বর্ণনার ভিত্তিতে ব্যাগগুলোর ওজন ফেনসিডিলের তুলনায় বেশি ছিল।’ প্রাক্তন অধিনায়ক মাহাবুব মুর্শেদ রহমান বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে সীমান্তে অস্ত্র পাচারের তৎপরতা লক্ষ করা যাচ্ছে। অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে এবং নির্বাচনের আগ মুহূর্তে সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র প্রবাহ রোধে আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা পালন করছি।


