মো:ফারুক আহমেদ ঘাটাইল (টাঙ্গাইল)প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে নানা অনিয়ম দূর্নীতি স্বেচ্ছাচারিতায় ভরে গেছে বাইচাইল ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা।মাদ্রাসার সুপার ও সভাপতির একের পর এক দুর্নীতির কারণে মুখ থুবড়ে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম।টিনের চাল থেকে শুরু করে,জায়গা জমি,গাছপালা,সরকারি যাবতীয় অনুদানসহ সকল কিছু গিলে খাচ্ছে এই দুই ব্যক্তি।দৈনিক গোমতীর বার্তা এর অনুসন্ধানে দেখা যায় সুপার একক ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে অর্থ আত্মসাৎ, শিক্ষকদের জিম্মি করে রাখা , সরকারি বরাদ্দের হরিলুট, প্রতিষ্ঠানের টিউশন ফি ও অন্যান্য থেকে আয় তছরূপ এবং গোপনে কমিটি গঠন সহ গুরুতর অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।সরজমিনে গিয়ে জানা যায় উপজেলার ২ নং সদর ঘাটাইল ইউনিয়নের বাইচাইল ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা অনিয়ম-দূর্নীতিতে ভরপুর হয়ে উঠেছে। প্রতিষ্ঠানের সুপার প্রতিদিন মাদরাসায় যায় শুধুই হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করার জন্যে, স্বাক্ষর করেই সুপার প্রতিদিন বেলা ১১টা বাজতে না বাজতেই ঘাটাইল সদরে সভাপতি আসাদুজ্জামান শোভনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শোভন টেলিকমে চলে যায়।মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষকদের সাথে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।অভিযোগের সততা খুঁজতে বারবার মাদরাসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে সভাপতির সাথে দেখা না মিললেও অবশেষে দেখা মিলে ঘাটাইল সদরে সভাপতির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শোভন টেলিকমে। সাংবাদিকের উপস্থিতি বুঝে উঠতেই সুপার সেখান থেকে সটকে পড়েন। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর খোঁজতে খোঁজতে আবার দেখা মিলে পাশের চায়ের দোকানে,পরে সেখানে কথা হয় সুপার আজহারুল ইলামের সাথে।মাদ্রাসার এসব অনিয়মের ব্যাপারে তার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন আমি কোন প্রকার দূর্নীতি করি নাই, টিউশন ফি’র টাকা আমি ভোগ করিনি।প্রতিষ্ঠানটির যে সভাপতি রয়েছে তিনি তার দায়িত্ব বুঝতে না পাওয়ায় এসব অভিযোগ আসতে পারে বলে তিনি জানান।অত্র মাদ্রাসার দাতা সদস্য ও সভাপতির পিতা ইদ্রিস হোসেন বলেন, আমার ছেলে সভাপতি সে একটু কম বুঝে তাকে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করি।অভিযোগ রয়েছে মাদ্রাসার সুপার ও দাতা সদস্য মিলে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন, রাগান্বিত হয়ে শিক্ষকদের দেখান বৃদ্ধাঙ্গুলি। মাদরাসার একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষক প্রতিনিধিরা জানায় মাদ্রাসার সুপার,সভাপতি ও তার বাবা কৌশলে একক আধিপত্য বিস্তার করে অর্থ আত্মসাৎ, শিক্ষকদের টিউশন ফি বানিজ্য, সরকারি বরাদ্দের অর্থ লুটপাট, এবং গোপনে কমিটি গঠনের অভিযোগ করেন তারা। এদিকে স্থানীয়দের ত্যাগ ও অর্থায়নে মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা করা হলেও এখন কমিটিতে জায়গা হচ্ছেনা ত্যাগীদের। ইদ্রিস হোসেন শর্তসাপেক্ষে কিছু জমি মাদরাসায় দান করে ছিলেন।মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর জমির দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন তিনি মাদরাসার জমি ফেরত নেওয়ার বিভিন্ন অপকৌশলের অংশ হিসেবে মাদ্রাসার শিক্ষা কার্যক্রম যাতে চিরতরে বন্ধ করে দেয়া যায় সেই লক্ষ্য নিয়ে তার নিজের পুত্রকে মাদ্রাসার সভাপতি নিযুক্ত করে সুপারের সহযোগিতায় এসব লুটতরাজ করে যাচ্ছেন। স্থানীয়রা জানায় ইদ্রিস আলী বর্তমানে চায় মাদরাসাটি বিলুপ্ত করে তার জমি বুঝে নিতে। অথচ মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠায় অর্থ এবং শ্রম দিয়েছেন স্থানীয় শিক্ষানুরাগীরা। এখন স্থানীয়দের বাদ দিয়েই মনগড়া কমিটি দিয়ে চলছে এই প্রতিষ্ঠান। পিতা পুত্রের যোগসাজসে প্রতিষ্ঠান সুপারের নানা অনিয়মে প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে বাঁধার সৃষ্টি হয়েছে। আর এর প্রভাব গিয়ে পড়ছে শিক্ষার্থীদের উপর। এবতেদায়ী প্রথম শ্রেণি থেকে দাখিল ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত মাদরাসাটিতে আশেপাশের চার-পাঁচটি গ্রামের কমপক্ষে ৩০০ থেকে ৪০০শিক্ষার্থী লেখাপড়া করার সম্ভাবনা থাকলেও এখন নানা অনিয়ম-দূর্নীতির কারণে প্রতিষ্ঠানটি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন স্থানীয় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। ফলে কোনরকম খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি।একসময়ে উপজেলার স্বনামধন্য এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির করুণ দশায় এবার ফুঁসে উঠেছে স্থানীয় সুশীল সমাজ। প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। মাদরাসাটির ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, কমিটির মিটিং সিদ্ধান্ত হয় এক রকম, রেজুলেশন খাতায় লেখা হয় সুপার ও সভাপতির স্বার্থে আরেক রকম। কৌশলে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের রেজুলেশন বহিতে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়।কেউ স্বাক্ষর দিতে আপত্তি করলে সভাপতির পিতা ইদ্রিস হোসেন হুমকি দিয়ে বলেন আমি যা করবো তাই হবে। রেজুলেশনে তোমাদের মতো সদস্যেদের স্বাক্ষর না হলেও সমস্যা নাই। এভাবেই অভিভাবক সদস্যদের অপমান করে পিতা পুত্র ও সুপার মিলে গিলে খাচ্ছে মাদ্রাসাটি।২/৩ জন অভিভাবক


