ফাহিম হোসেন রিজু, ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে বিদ্যুৎ খুঁটির নিচেই চলছে প্রকাশ্য চুরি। আর এই চুরির সঙ্গে স্থানীয় ক্যাবল অপারেটরদের পাশাপাশি পল্লী বিদ্যুৎ প্রশাসনের যোগসাজশের অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার প্রায় প্রতিটি খুঁটিতে ক্যাবল অপারেটররা সেন্সর/নোড মেশিন বসিয়ে মূল লাইন থেকে সরাসরি বিদ্যুৎ টেনে নিচ্ছে। এসব সংযোগ কোনো মিটারের আওতায় না থাকায় এক টাকাও বিল দিচ্ছে না তারা। অথচ এভাবে চুরি হওয়া বিদ্যুৎ সরকারের হিসাবেই “সিস্টেম লস” হিসেবে গণ্য হচ্ছে ফলে সরকার হারাচ্ছে কোটি টাকার রাজস্ব। শুধু তাই নয়, এই বিদ্যুৎ চুরির কারণে লোডশেডিং ভয়াবহ আকারে বেড়ে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সোহেল প্রধান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা যদি এক মাসের বিল দিতে দেরি করি, সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুতের লাইন কেটে দেওয়া হয়, জরিমানাও গুনতে হয়। অথচ কিছু রাঘব বোয়াল প্রশাসনের আঁতাতে বছরের পর বছর বিদ্যুৎ চুরি করছে, তাদের কেউ ধরছে না।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্যাবল অপারেটরের সহযোগী জানান, “বিদ্যুৎ বিভাগের কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী বিনা টাকায় আমাদের ডিশ লাইন ব্যবহার করে। এর বিনিময়ে তারা বিদ্যুৎ চুরির বিষয়টা চুপচাপ দেখে না দেখার ভান করে।”
এ বিষয়ে ঘোড়াঘাট জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মোঃ কামরুজ্জামান স্বীকার করে বলেন, “ক্যাবল অপারেটররা বিদ্যুৎ চুরি করছে এটা আমাদের জানা। কিন্তু তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।”
অন্যদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিদ্যুৎ প্রশাসনের এই অসহায়ত্বের ব্যাপারে অবগত হয়ে বলেন,
“বিদ্যুৎ চুরির বিষয়টি আগে জানতাম না। পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কিন্তু সচেতন মহল প্রশ্ন তুলেছে, বিদ্যুৎ খুঁটিতে দিনের আলোয় বিদ্যুৎ চুরি চলে, সাধারণ মানুষ চোখে দেখে, অথচ বিদ্যুৎ প্রশাসন নাকি পারে না নিয়ন্ত্রণ করতে! তাহলে কি প্রকৃতপক্ষেই এই চোরাই বিদ্যুৎ ব্যবসার মূল হোতা বিদ্যুৎ প্রশাসনেরই কিছু অসাধু কর্মকর্তা?


