নিজস্ব প্রতিবেদক
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায় টেস্ট রিলিফ (টিআর) প্রকল্প ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের এমন অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র ধরা পড়েছে, যা সাধারণ মানুষের ধৈর্য পরীক্ষা করছে। পুরো উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কাজের মান কমিয়ে দেখানো, মাটির রাস্তার কাজ নামমাত্র করা এবং তদারকির শূন্যতার কারণে সরকারি বরাদ্দের বড় অংশ ব্যক্তিগত পকেটে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
টিআর প্রকল্প পরিচালিত হয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন–২০১২ অনুযায়ী। এই আইনের অধীনে দুর্যোগকালীন ত্রাণ, খাদ্যসহায়তা এবং শ্রমনির্ভর কর্মসূচি বাস্তবায়ন হয়। প্রকল্পের বিস্তারিত নির্দেশনা জারি করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর (ডিডিএম)। মাঠ পর্যায়ে তদারকি এবং বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ, যা ইউনিয়ন পরিষদ আইন ২০০৯ অনুযায়ী দায়িত্বশীল।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাশিয়ানী উপজেলার রাজপাট ইউনিয়নের বড়বাহিরবাগ গ্রামের পূর্ব পাড়ায় এলজিইডি রাস্তা থেকে হারেজ মোল্যার বাড়ি পর্যন্ত এক’শ ফুট টিআর কাজ করা হয়েছে। তবে সেখানে নির্মাণ করা হয়েছে নিম্নমানের ইট ও বালু দিয়ে ফ্লাট সোলিং এর রাস্তা, যার মান এতই খারাপ যে প্রকৃত কাজের চেহারা একেবারেই নেই।
এ বিষয়ে প্রকল্পের পিআইসি (CBC) মন্জু আরা বেগম( ময়না) মেম্বার এর কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে বলেন এটি আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে করা হয়েছে, পরে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
তবে সাধারন জনগন বলছে,উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, সদস্য ও স্থানীয় কমিটির অংশীদাররা মিলে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। তারা নিজেদের পছন্দের ঠিকাদার দিয়ে কাজ করাচ্ছেন এবং বরাদ্দের ভাগবাটোয়ারা করছেন। ফলে টিআর প্রকল্প থেকে সাধারণ মানুষ কোনো সুবিধা পাচ্ছে না, বরং অনিয়মকারীরা সুফল ভোগ করছে।
প্রকৃত তদারকির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা মাঠে যাচ্ছে না, যাচাই-বাছাই করছেন না। কাগজে নামমাত্র পরিমাপ দেখিয়ে বিল পাশ করা হচ্ছে। কর্মকর্তাদের নীরবতা ইচ্ছাকৃতভাবে অনিয়মকে আরও শক্তিশালী করছে।
তবে কিছু স্থানে এমন দৃশ্যও দেখা গেছে, যেখানে মাঠে কোনো কার্যকর কাজ হয়নি, নামমাত্র কাজ করে প্রকল্প চালু দেখানো হচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন, টিআরের কাজে সাধারণ মানুষ কোনো সুবিধা পায় না, সব পকেট ভরার ধান্দা।
স্থানীয়রা দাবি করেছেন, টিআরের চলমান অনিয়ম বন্ধে অবিলম্বে তদন্ত, জড়িতদের শনাক্তকরণ এবং কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন, যাতে প্রকৃত সুবিধা জনগণের হাতে পৌঁছায় এবং সরকারি অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহার হয়।
উপজেলার এমন কাজের বিষয় নিয়ে কাশিয়ানী উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আওয়াল হোসেন এর সঙ্গে কাথা বললে তিনি, সঠিক তথ্যদিতে নারাজ।
তবে এবিষয়ে কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলছে, উপজেলায় যে সমস্ত কাজ চলমান রয়েছে ,আমরা মাঠ পর্যায়ে তদন্তকরে দেখবো কাজ সম্পূর্ণ না হলে বিলপাশ করা হবে না।


