■ কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি
এম,এম তৈয়্যবুর রহমান
সুন্দরবনের নদী-খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকারের কারণে হুমকির মুখে রয়েছে মৎস্যসম্পদ। বিষ দিয়ে ধরা মাছ প্রকাশ্য মৎস্য আড়তে ও হাটবাজারে বিক্রি হচ্ছে। দেউলিয়া বাজার মৎস্য আড়তে যেয়ে এমনি চিত্র দেখা গেছে।
সেখানে কথা হয় ফরহাদ ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাড়িতে মেহমান এসেছে সে জন্য মাছ কাটায় গিয়েছিলাম মাছ কিনতে, কিন্তু মাছ কেনা হলো না।’ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেকেই বলছেন সুন্দরবনে নদী-খালে বিষ দিয়ে ধরা মাছ, সে জন্য মাছ না কিনে ফিরে এসেছি।’
অথচ সুন্দরবনের নদী-খাল বিষমুক্ত করতে বনবিভাগ ইতিমধ্যে লিখিত নির্দেশনা বনবিভাগের সব অফিসে পাঠিয়েছেন। নির্দেশনায় সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ ধরা, অভয়ারণ্য প্রবেশ করে বন্যপ্রাণী শিকার বন্ধের জন্য পাশ ইস্যু করার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কয়েকটি শর্ত আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু কোন শর্তই মানছেন না জেলেরা। তারা পুরাতন নিয়মে অভয়ারণ্য (নিষিদ্ধ খালে) বিষ দিয়ে মাছ ধরছে। যার ফলে হুমকির মুখে রয়েছে সুন্দরবনের মৎস্য সম্পদ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১ জুন থেকে তিন মাস সুন্দরবনে মাছ ধরা বন্ধ ছিল। গত ১ সেপ্টেম্বর সুন্দরবনে জেলেদের মাছ ধরার অনুমতি দিয়েছে বন বিভাগ। অনুমতি পেয়েই পূর্বের ন্যায় জেলেরা সুন্দরবনের নদী-খালে বিষ দিয়ে মাছ ধরা শুরু করেছেন। তিন মাসের ঘাটতি পোষাতে সুন্দরবনের নীলকোমল, ভোমরখালী, গেওয়াখালী ও কাগা দোবেকী বন টহল ফাঁড়ির কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে চুক্তি করে কালিরচর, সিসখালী, ছদনখালী, কাগান্দী, মরাবাবগা ও কেওড়াতলী খাল, ভোমরখালী কুকুমারী, বড় কুকুমারী, ভোমরখালী ও খলিশাবুনিয়া নিষিদ্ধ খালে বিষ প্রয়োগ করে মাছ ধরছে জেলেরা।
কাগাদোবেকী বন টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম আবু সাইদ বলেন, ‘আমরা কোন সহযোগিতা করি না। বরং অভয়ারণ্য যাতে কেউ মাছ ধরতে না পারে সে জন্য বনবিভাগের লোকজন সতর্ক রয়েছে।’ কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা নির্মল চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘কোন জেলে সুন্দরবনের নদী-খালে বিষ দিয়ে মাছ ধরতে না পারে সে জন্য বনবিভাগের পক্ষ থেকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’ সুন্দরবন পশ্চিম বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ডক্টর আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ শিকার ও অভয়ারণ্য প্রবেশ করে বন্যপ্রাণী শিকার বন্ধের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।